GuidePedia

0
ভালোবাসার শেষ হাসি

"ভালোবাসা'র শেষ হাসি"
- হি হি হি
- ওই ছাগলীর মতো হাসিস ক্যান?
- আমি ছাগলী?
- হ্যা। তুই ছাগলী ।
- আমি ছাগলী হলে তুই ছাগল।
- হুমম। আমি ছাগলীর ছাগল।
- বয়েই গেছে আমার।
- আমাকে তোর বর বানাবি?
- ইহ! ছেলের শখ কতো! !! আমার বর হতে চায়। আমার
বর তোর মতো ছাগল নয়।
- তাই নাকি? তাহলে কি ভেড়া?
- আরে ধুর, আমি কি সেটা বলছি? ??
- তাহলে কি বলছিস?
- খুব স্মার্ট হবে।
- আমি স্মার্ট না?
- তুই তো ................. থাক আর না বলি।
- না বলিস নাই। একবার ভালোবাসি বল না রে।
- যাহ। ভাংতি নাই। পরে আসিস। বিবেচনা করে দেখবো।
- এতো দিন পর ওয়েটিং লিষ্টে রাখলি?
- হুমম। রাখি তাহলে।
- আচ্ছা গুড নাইট ।
- গুড নাইট।
কথা বলতে বলতে কখন যে রাত এতো গভীর হয়ে
গেছে দুজনের একজন ও টের পায় নি। রিফাত এতো
রাতে ছাদে যাওয়ার চিন্তা করলো।ঘরির কাটায় রাত তখন ২ টা
বাজে। রিফাত ধির পায়ে ছাদে গেলো। জোৎস্না ভরা
রাতটি তখন প্রায় নিভু নিভু ভাব নিয়েছে। আর চাদ টার
আলো ও কমতে শুরু করেছে। হালকা আলোয়
নিজের প্রতিচ্ছবি ও খুব হালকা দেখা যায়। রিফাত রুপার কথা
ভাবতে লাগলো।
.
রিফাত আর রুপা খুব ভালো বন্ধু। শুধু বন্ধু নয়। বন্ধুর
চাইতেও অনেক বেশি। যা চোখে দেখা যায় না। শুধুই
অনুভব করা যায়। রিফাত আর রুপাও ঠিক ঐ অবস্থানে আছে।
মানে, একে অপরের প্রতি দুর্বল। একে অপরকে
ভালোবাসে। কিন্তু রুপা কিছুতেই তার ভালোবাসার কথা
প্রকাশ করতে চায় না। রিফাত জানেও না যে রুপা কাকে
ভালোবাসে !
একদিন রুপা আর রিফাত কলেজে বসে কথা বলতে
বলতে রিফাত বলল
- আচ্ছা রুপা একটা সত্য কথা বলবি?
- হ্যা বল।
- আচ্ছা তুই কি কাউকে ভালোবাসিস?
- হ্যা , ভালোবাসি। ক্যান বলতো ?
- আমি ভালোবাসি তোকে, আর তুই অন্য
কাউকে....................
- আরে তুই আর আমি তো বন্ধু। নাকি?
- হ্যা। আমি যে তোকেই ভালোবাসি। শুধু তোকেই।
- দেখ , তুই আর আমি বন্ধু । আর কিছুই না।
- আচ্ছা তুই কাকে ভালোবাসিস?
- বলা যাবে না।
- ক্যান? আমি তোর বন্ধু না?
- বন্ধু তো অবশই।
- তাহলে বল।
- বাসায় যা। তোকে ফোনে বলব।
- আচ্ছা। থাক আমি গেলাম। তোর ফোনের জন্য
ওয়েট করবো।
রাতের বেলা । রুপা ছাদে হাটছে আর ভাবছে " কিভাবে
রিফাতকে বলা যায় ? " হঠাৎ রুপার স্মরন হলো, তার
রিফাতকে ফোন দেওয়ার কথা ছিলো। রিফাতের নাম্বার
সেভ করে নি। এতো নাম্বারটা ইউজ করে যে সেটা
মুখস্ত হয়ে গেছে। রিফাতকে ফোন দিলো
- হ্যালো রিফাত
- হ্যা বল
- কেমন আছিস?
- ভালোই। তুই?
- আমিও। তোকে একটা কথা বলার ছিলো ।
- হুমম বল।
- আমি তোকে ( বলেই থেমে গেলো। রুপা
ভাবলো আর কয়দিন জালাই। তারপর ওকে বলব)
- কি ? আমাকে ভালোবাসিস?
- তোর মতো ছাগলকে? আমি তোকে বন্ধু ভাবি।
- তো? তুই কাকে ভালোবাসিস? নামটা বল। প্লিজ
- রওনোক। খুব ভালোবাসে আমায়। আমিও খুব
ভালোবাসি ওকে। হি হি হি
- ও ,ভালো থাকিস । আমি সরি রে।
বলেই ফোন বন্ধ করে দেয় রিফাত। রিফাতের Heart
এর সমস্যা। ডাক্তার বলেছে রিফাত যেন টেনশন না
করে। না হলে যে কোনো সময় Heart Attack
করতে পারে। তাই রিফাতের বাবা মা রিফাতকে খুব কেয়ার
করে।
সেদিন রাতে রুপা অনেকবার রিফাতের ফোনে ফোন
দেয়। কিন্তু প্রত্যেকবার নাম্বার বন্ধ দেখায়। রুপা একটু
ভয় পেলো। আবার ভাবলো, হয়তো ফোনের
ব্যাটারি ড্যামেজ হয়ে গেছে। একটু পর রুপা ঘুম এলো।
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে তার ফোনে একটি
ম্যাসেজ। ম্যাসেজটি রিফাতের। ম্যাসেজে লেখা
ছিলো " হি হি হি " । রুপা কিছু বুঝতে না পেরে রিফাতের
নাম্বারে ফোন দেয়।
- হ্যালো রিফাত
- কে? রিফাত কাল রাতে Heart Attack এ মৃত্যু বরণ করে।
( কাঁদোকাঁদো কন্ঠে এক মহিলা বলল)
- কিই? রিরিফাত মারাআ গেএছে? ( মুখ থেকে কথা বের
হচ্ছিলো না)
- হ্যা। তুমি কে?
- ( রুপা কোনো কথা বলছে না। চোখের পানি
অঝোরে ঝরছে। মনে মনে নিজেকে অপরাধী
করলো। তার জন্যই তো রিফাত আজ চিরনিদ্রায় শায়িত
হয়েছে। )
.
রিফাত যখন ফোন বন্ধ করলো তার কিছুক্ষণ পর তার
বুকের ব্যথা বাড়তে শুরু করলো। চোখ ফেটে পানি
বের হতে চাইছিলো। কিন্তু আর সুযোগ নেই। খুব
তাড়াতাড়ি ফোন অন করলো।এম সি এ তে দেখে, রুপার
অনেক কল এসেছিলো। খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো রুপাকে
ফোন করতে। কিন্তু নিজের অবস্তা খুবি খারাপ। তাই
ছোট্ট একটা হাসির ম্যাসেজ দিলো। কিছুক্ষণ পর
রিফাতের হাত থেকে ফোনটা পড়ে যায়। রিফাত বিছানায় গা
এলিয়ে দেয়।চোখ যে আর খুলছে না। শ্বাস যে আর
বের হচ্ছে না। আস্তে আস্তে দেহ থেকে প্রাণটা
বেড়িয়ে যায়। কেউ টের পায়নি। সকালে রিফাতের মা
এসে তার লাশটা দেখতে পায়।
.
সেই থেকে রুপা হাসি জিনিসটার সাথে আর পরিচয় হয়নি।
জীবনে আর মিথ্যাও বলেনি। যে মিথ্যা প্রাণকে হারায়
সেই মিথ্যাকে আর প্রশ্রয় দেয়নি।
.
______________ গল্পের ক্ষুদ্র লেখক

Ref- Net
 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top